• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

২০৪১ সালের মধ্যে ৮৫ লাখ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদনের টার্গেট

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২৪ আগস্ট ২০২৩

 মো: ইলিয়াছ:

বাঙালিকে বলা হয় ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’ সেই নদীর দেশ আর পুকুরভরা মাছের দেশ বাংলাদেশ এখন প্রায় খাল-বিল-নদী-নালা শূন্য। খাল-বিল ভরাট করে চলছে নানা স্থাপনা তৈরির মহোৎসব।

সুতরাং খাল-বিল না থাকলে মাছ থাকবে কোত্থেকে? তবে দেশে আছে শেখ হাসিনা সরকার। এত এত প্রতিবন্ধকতার মাঝেও মৎস ও প্রাণীসম্পদকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য গ্রহন করেছে নানা পদক্ষেপ।

পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ বিনির্মাণে  ২০৪১ সালের ভিতর মাছ উৎপাদন করবে ৮৫ লাখ মেট্রিকটন যা বর্তমান উৎপাদনের চেয়ে প্রায় ১.৮ গুন বেশি।

 

এই পরিমাণ মাছ উৎপাদন করতে যে প্রযুক্তির ব্যবহার দরকার তা সবকিছু করতেই প্রস্তুত রয়েছে সরকার। শুধু মাছ উৎপাদনেই নয় বরং এসব মাছ যেনো মানব স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ হয় সেই বিষয় গুরুত্ব দিয়ে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছে তারা। বাজারে ফরমালিন মুক্ত মাছ এবং দেশের অভ্যন্তরীণ ও সামুদ্রিক জলাশয়ে দূষণ প্রতিরোধেও সরকার কাজ করে যাচ্ছে। 

 

শুরুটা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য মৎস খাতে গুরুত্ব দিয়ে বলেছিল, ”মাছ হবে দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ।”আর এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৩ সালে গণভবন লেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মাছের পোনা অবমুক্ত করে মৎস চাষকে সামাজিক আন্দোলনে রুপ দিয়েছিলেন। আর সেই সামাজিক আন্দোলনে রুপ  যেনো প্রমাণ করে চলেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার। তার নেতৃত্বে অভ্যন্তরীণ মুক্ত ও বদ্ধ  এবং সামুদ্রিক জলাশয়ে উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনার জন্য সময়োপযোগী পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে বাংলাদেশ মাছ উৎপাদনে এখন স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।

 

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার 'দ্যা টেস্ট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার-২০২২' প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বে অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ আহরণে বাংলাদেশ ৩য়, বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে ৫ম, ইলিশ উৎপাদনে ১ম এবং তেলাপিয়া উৎপাদনে ৪র্থ অবস্থানে রয়েছে।

 

বর্তমান সরকারের সময়োপযোগী নীতি ও প্রকল্প গ্রহণের ফলে গেলো ১০ বছরে মাছ উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৫৫ শতাংশের বেশি। যেখানে ২০১০-২০১১ অর্থবছরে মোট মাছ উৎপাদন হয়েছে ৩০.৬৩ লাখ মেট্রিক টন সেখানে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে তা বেড়ে দাড়িয়েছে ৪৭.৫৯ লাখ মেট্রিক টন। আর তাতেই বুঝা যায় বর্তমান সরকার মৎস খাতে কতটা গুরুত্ব দিয়েছে।

আর এই উৎপাদিত মাছ বর্তমানে  আআন্তর্জাতিক বাজারে পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ।  যুক্তরাষ্ট্র, চীন,ভারত, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি সহ ৫২ টিরও বেশি দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃত মৎস্যজাত পণ্যের প্রায় ৭০ শতাংস ভ্যালু অ্যাডেড প্রোডাক্টস।

শুধ রপ্তানি নয় আন্তর্জাতিক বাজারে যেনো নিরাপদ ও মানসম্পন্ন মাছ রপ্তানি করা যায় সেজন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় ৩ টি বিশ্বমানের মাননিয়ন্ত্রন পরীক্ষাগার স্থাপন করা হয়েছে।

 

শুধু মৎস উৎপাদন বৃদ্ধি নয় মৎসজীবিদের জীবনমান উন্নয়নেও কাজ করে যাচ্ছে সরকার। মানুষের কর্মসংস্থান, জেলেদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, মৎস অভায়শ্রম ও সংরক্ষিত এলাকা স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ, মৎস প্রক্রিয়াজাতকরণে সহায়তা প্রদান এবং মৎস ও মৎসপণ্য রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণসহ নানাবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে।  বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্য ও পুষ্ঠি চাহিদা পূরণে মৎস খাতে ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছে সরকার।

 

প্রকৃত জেলেদের সনাক্ত করে তাদের নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে জাটকা ও মা ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে ৯ লাখ ১৫ হাজার ৭৫৬ টি জেলে পরিবারকে মোট ৭১ হাজার ৬শ ১১ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিবছর ৬৫ দিনে সমুদ্রে মাছ ধরা নিষিদ্ধকালে জেলেদের ৪০ কেজি হারে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। সাসটেইনেবল কোস্টাল  মেরিম ফিশারিজ প্রকল্পের আওতায় আইডি কার্ড প্রদানের জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার মৎসজীবিদের ডাটাবেইজ হালনাগাদ করেছে সরকার।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads